ভয়েস এশিয়ান, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩।। এক দফার আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নেওয়ার আগে আবারও তৃণমূলে ফিরেছে বিএনপি। রোডমার্চ সমাবেশের মতো কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নেতাকর্মীদের রাজপথে সক্রিয় রাখতে চায় দলটি। শতভাগ প্রস্তুতি নিয়েই অবরোধ-ঘেরাও কিংবা হরতালের মতো কর্মসূচি দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের। কর্মসূচির বিরতি না দিয়েই চূড়ান্ত আন্দোলনে নামার চিন্তা বিএনপির। আগামীকাল সোমবার দলের পক্ষ থেকে এসব কর্মসূচির বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।
বিএনপি ও যুগপৎ শরিকদের সূত্রে জানা যায়, ২৯ জুলাই ঢাকার চারমুখে অবস্থান কর্মসূচিতে ধাক্কা খাওয়ার পর বেশ সতর্ক বিএনপি। নেতাকর্মীদের আবারও রাজপথে চাঙ্গা করতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জেলায় রোডমার্চ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করবে। যা চলবে অক্টোবরের প্রায় প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। এরপর ঢাকাকেন্দ্রিক হবে কয়েকটি টানা কর্মসূচি। এসব কর্মসূচির মধ্যেই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ঘেরাও কিংবা অবরোধের কর্মসূচি দেওয়া হবে। সবশেষ আসতে পারে ধর্মঘট বা হরতালের ডাক। এর আগে ২৫ ও ২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় হবে ছাত্র ও শ্রমিক কনভেশন। রাজপথে বিরোধী সব ছাত্র ও শ্রমিক সংগঠনকে মাঠে নামানোর চিন্তা থেকেই বিএনপির এই উদ্যোগ।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ বলেন, রংপুরে পদযাত্রা হয়েছে। আজ রাজশাহীতে হবে। নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে মাঠে নিয়ে আসাই আমাদের মূল লক্ষ্য। ধারাবাহিকভাবে সারা দেশে কর্মসূচি দেওয়া হবে। এর জন্য প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি থাকবে না। চূড়ান্ত আন্দোলন বলতে সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করার মতো কর্মসূচি দেওয়া হবে। বিএনপি এবার সবাইকে নিয়ে মাঠে নেমেছে। পিছু হটার সুযোগ নেই। আন্দোলনের সব ধরনের গ্রাউন্ড ওয়ার্ক করা হচ্ছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ^^র চন্দ্র রায় সময়ের আলোকে বলেন, আমরা হরতালে যাব না- এটা তো বলিনি। সরকারের মনোভাব ও জনগণের চাহিদার ওপর নির্ভর করছে আমাদের কর্মসূচির ধরন। আন্দোলনের গণজোয়ার তৈরি হয়েছে। এখন শুধু চূড়ান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকারকে শেষ আঁচড় দেওয়া হবে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের পর। এর আগে টানা কর্মসূচি দিয়ে নেতাকর্মীদের আবারও উজ্জীবিত করা হবে। আর অবশ্যই তফসিল ঘোষণার আগেই এই সরকারের বিহিত করা হবে।
তিনি বলেন, ঘেরাওয়ের বদলে হয়তো নামের ভিন্নতা আসতে পারে। আদালত কিংবা সচিবালয় অভিমুখে অভিযাত্রা- এভাবে পরবর্তী কর্মসূচির পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান সময়ের আলোকে বলেন, অক্টোবরে আন্দোলনের ফাইনাল খেলা হবে ঢাকায়। তৃণমূল থেকে সবাই ঢাকায় আসতে প্রস্তুত। দলের হাইকমান্ড ওয়ান টু ওয়ান কথা বলছেন আন্দোলন নিয়ে। সব ধরনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে বার্তা দেওয়া হচ্ছে তৃণমূলে। সে সঙ্গে ঢাকাকে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে।
বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আ ন ম সাইফুল হক জানান, সামনে কী ধরনের কর্মসূচি আসবে আভাস দেওয়া হচ্ছে মাঠ পর্যায়ের নেতাদের। তা সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে মাঠে আনতে কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা রয়েছে। কর্মসূচি বাস্তবায়নে হাইকমান্ড যেভাবে নির্দেশনা দিচ্ছেন সেভাবেই কাজ চলছে। কর্মসূচির আগে ও পরে হাইকমান্ডের সঙ্গে তাদের সরাসরি আলোচনা হচ্ছে।
উত্তর বিএনপির একজন নেতা বলেন, গেল ২৯ জুলাইয়ের কর্মসূচির রেজাল্ট নিয়ে হাইকমান্ড এখনও ক্ষুব্ধ। এর পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়Ñ সেদিকে দল বেশ সতর্ক। এ জন্য এবার তৃণমূল থেকে ঢাকা, শতভাগ প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামা হচ্ছে। যেসব সাংগঠনিক ইউনিট দুর্বল সেখানে জোর দেওয়া হচ্ছে। পদ নিয়ে এবার কারও ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই। হয় পদ ছাড়তে হবে নয়তো রাজপথে আসতে হবে। অঙ্গসংগঠনগুলোকেও শক্তিশালী করা হচ্ছে। চূড়ান্ত আন্দোলনে যাওয়ার আগে সারা দেশে অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে আবার বসবেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।