ভয়েস এশিয়ান, ০৩ মে, ২০২৩।। হঠাৎ করেই গত মার্চ মাসে বিদেশি কর্মী নেওয়া বন্ধ ঘোষণা করেছে মালয়েশিয়া। এতে বিদেশি কর্মীর অভাবে সার্বিকভাবে দেশের উৎপাদনশীলতায় ভয়াবহ প্রভাব পড়বে। জিডিপি কমে যাবে, কারণ কোম্পানি পণ্য সরবরাহের আদেশ পূরণ করতে পারবে না, বিশেষ করে রফতানি আদেশগুলো। বিদেশি কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া স্থগিত করায় বৃহত্তর ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারারের (এফএমএম) সভাপতি সো থিয়ান লাই গত ১ মে এসব কথা বলেছেন।
গত ১৮ মার্চ মানব সম্পদ মন্ত্রী শিবকুমার ঘোষণা করেন, সব আবেদন এবং বিদেশি কর্মীর রিক্রুটিং প্রক্রিয়া পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। নিয়োগকর্তাদের ৯ লাখ ৯৫ হাজার ৩৯৬ জন বিদেশি কর্মী আনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কেবল নিয়োগকর্তা অনুমোদিত কর্মীদের মালয়েশিয়ায় আনা নিশ্চিত করা হলে তবেই স্থগিতাদেশ পর্যালোচনা করা হবে।
ইউনিভার্সিটি মালায়ার নাজারি ইসমাইল এফএমএমের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেছেন, উৎপাদকদের প্রতিযোগিতামূলক রফতানি বাজারে টিকে থাকার জন্য সস্তা শ্রমিক দরকার। ঋণগ্রস্ত উৎপাদকদের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা তাদের খরচ কমানোর জন্য বাধ্য করে এবং খরচ কমানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হলো সস্তা শ্রম ব্যবহার করা।
নাজারি বলেন, উৎপাদক কোম্পানি যদি ক্রেতার অর্ডার পূরণ করতে না পারে তা হলে দীর্ঘমেয়াদে তাদের (উৎপাদক) সুনামের ক্ষতি হয় এবং রাজস্ব কমে যায়। ফলে বিদেশি ক্রেতারা অন্যদেশ থেকে পণ্য নেবে আর আমাদের (মালয়েশিয়ার) অর্থনীতি আসলেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বিদেশি কর্মী নিয়োগের বিদ্যমান স্থগিতাদেশ মেয়াদ দীর্ঘ হলে এসএমই খাত মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কর্মীর অভাবে এসএমই নিয়ে যে পরিকল্পনা করা হয়েছে সেগুলো অর্জন করা জটিল হবে।
অন্যদিকে আগামী ১০ মে ঢাকায় আসছেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র সচিব জেনারেল দাতো শ্রী মোহাম্মদ জীন। জানা গেছে, তার এই সফর বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সফরে বন্ধ হওয়া কর্মী নেয়া প্রক্রিয়ার দ্বার খোলার বিষয়ে আলোচনা হবে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, দুই পক্ষের আসন্ন ফরেন অফিস কনসালটেশন বৈঠকে ঢাকার পক্ষে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন নেতৃত্ব দেবেন। তিনি এখন প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র রয়েছেন, আগামী ৯ মে দেশে ফিরবেন।
অন্যদিকে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র সচিব জেনারেল দাতো শ্রী মোহাম্মদ জীন দেশটির পক্ষে আসন্ন বৈঠকে নেতৃত্ব দেবেন। বৈঠকে ঢাকার পক্ষে জনশক্তি রফতানি প্রক্রিয়া সহজ করতে গুরুত্ব দেওয়া হবে। যাতে এই খাতে কোনো পদ্ধতি বজায় না থাকে এবং কর্মীরা কম খরচে মালয়েশিয়া যেতে পারেন। এ ছাড়া কৃষি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং পর্যটন খাতে ঢাকার পক্ষে গুরুত্ব দেওয়া হবে।