ভয়েস এশিয়ান, ৩০ জানুয়ারী, ২০২৩।। রাশিয়ার সঙ্গে প্রায় এক বছর ধরে ভয়াবহ যুদ্ধ চলছে ইউক্রেনে। পশ্চিমাদের বিপুল সহায়তায় রাশিয়াকে টক্কর দিচ্ছে ইউক্রেন। তবে আরও একটি যুদ্ধে লড়তে হচ্ছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে। দেশটিতে আগে থেকে রাজনীতি ও প্রশাসনে ব্যাপক দুর্নীতি ছিল, যুদ্ধে বিদেশি বিভিন্ন সহায়তা ও সেগুলো বণ্টনের ক্ষেত্রেও ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন জেলেনস্কি।
এক ঘোষণায় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, যুদ্ধের আড়ালে দেশটিতে ব্যাপকহারে দুর্নীতি চলছে, যা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। শিগগিরই দুর্নীতিকে সমূলে বিনাশ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
যুদ্ধাবস্থার মধ্যেও সম্প্রতি দেশটির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ প্রকাশিত হয়েছে। বিশেষ করে সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়ে বিপুল দুর্নীতি হচ্ছে বলে জানা গেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জেলেনস্কি এমন হুঁশিয়ারি দেন।
ভিডিও ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, অতীতে আমরা কীভাবে কাজ করেছি সেই ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই। বিশেষ করে কিছু মানুষ যেভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করেছে এবং ক্ষমতার পেছনে ছুটেছে, সেখানে ফিরে যাওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই।’
দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা ও তদন্ত শুরুর পর এরই মধ্যে পদত্যাগ করেছেন প্রেসিডেন্ট অফিসের উপ-প্রধানসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। ডেপুটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ভায়াচেস্লাভ, ডেপুটি প্রসিকিউটর জেনারেল ওলেক্সি সিমোনেঙ্কোও পদত্যাগ করেছেন।
দুর্নীতির সঙ্গে ইউক্রেনীয়দের পরিচয় নতুন নয়। দেশটির ইতিহাসে দুর্বল শাসনব্যবস্থা বরাবরই দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। ২০২১ সালে ইউক্রেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির তালিকায় বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে ১২২ তম স্থানে ছিল।
ইউরোপীয় ইউনিয়নও তাদের সদস্যপদের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে ইউক্রেনে দুর্নীতি নির্মূল করাকে অন্যতম শর্ত হিসেবে দিয়েছিল। ২০১৯ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর জেলেনস্কি ইউক্রেনের শাসনব্যবস্থার খোলনলচে বদলে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তার মধ্যে অন্যতম ছিল দুর্নীতি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট সেদেশের নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র নীতির মতো সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো ক্ষমতার অধিকারী। তবুও দুর্বল রাজনৈতিক অবস্থার কারণে দেশটিতে দুর্নীতি একটি স্থায়ী সমস্যা রয়ে গেছে।