বিভাগ : প্রবাস |
তারিখ : ০৫-০৫-২০২২ |

সিঙ্গাপুরে প্রবাসী শ্রমিক ও তাদের পাশে আইনি সেবা নিয়ে মানিকা এন্ড কোম্পানি

ভয়েস এশিয়ান সিঙ্গাপুর প্রতিনিধি |
|

ভয়েস এশিয়ান, ০৫ মে, ২০২২।। বর্তমান সিঙ্গাপুরের অবকাঠামো খাতই দেশটির অর্থনীতিকে চাঙা করে রেখেছে। আর এর জন্য দেশটিকে প্রচুর বিদেশি শ্রমিকের ওপর নির্ভর করতে হয়। জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের এক হিসাবে দেখা গেছে, বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার ও চীন থেকে ২ লাখ ৯৬ হাজার ৭০০ শ্রমিক এখানকার নির্মাণশিল্পে নিয়োজিত।
বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরে শ্রমিক হিসেবে গিয়েছেন মো. ইনসান আলী। স্বপ্ন ছিল সিঙ্গাপুরের অবকাঠামো খাত তাঁর জীবনকে পাল্টে দেবে। স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে সুখের জীবন হবে তাঁর। গত বছর এই শহরে আসেন তিনি। বলা হয়েছিল, মাসে তাঁকে ১ হাজার ৬০০ সিঙ্গাপুরি ডলার দেওয়া হবে। বাংলাদেশি টাকায় ১ লাখ ১ হাজার ৬৩৮ টাকা।
অথচ পৌঁছানোর পর তিনি দেখলেন, প্রতিদিন তাঁর মজুরি মাত্র ১৮ সিঙ্গাপুরি ডলার। নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান প্রথম আট মাস তাঁকে পুরো বেতন দিতে রাজি নয়। ইনসান আলী বলেন, মালিক মাত্র ২০০ থেকে ৩০০ সিঙ্গাপুরি ডলার দিয়েছিল। এর মধ্য থেকে খুব অল্প নিজের জন্য রেখে বাকিটা দেশে পরিবারের কাছে পাঠাতেন।
সিঙ্গাপুরে এসব শ্রমিকের দিনের পর দিন কেটে যায় কেবল মালিকপক্ষের আশ্বাসে। তাঁদের বলা হয়, কয়েক মাসের মধ্যে তাঁদের পুরো বেতন দিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু অনেকেই মাসের পর মাস কোনো মজুরি পান না। বেশির ভাগ সময়ই এসব শ্রমিক প্রতারণার শিকার হন, কম মজুরি পান। যখন সব মালিকপক্ষ একসঙ্গে শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার বিষয়ে নিজেদের হাত গুটিয়ে নেয় অথবা প্রত্যাখ্যান করে, যখন শ্রমিকেরা বুঝতে পারে মালিকপক্ষের আশ্বাস শুধু আশ্বাসই, তখনই নিজেদের দাবিতে জেগে ওঠেন শ্রমিকেরা।

কাজ করার পরও অনেক অভিবাসী শ্রমিকের কপালে জোটে না ন্যূনতম মজুরি। প্রযুক্তির জন্য প্রসিদ্ধ সিঙ্গাপুর সিটিতে নিজের পাওনার জন্য সংগ্রাম করতে হয় তাঁদের।
সংসদীয় এক প্রশ্নের মুখে সিঙ্গাপুরের জনশক্তিমন্ত্রী জানান, মধ্যস্থতা বা শ্রম আদালতের মাধ্যমে এসব মামলার ৯৫ শতাংশ সমাধান হয়। বেতন পরিশোধ না করায় গত তিন বছরে ১৫৮ জন নিয়োগকারী দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
সরকার তার ব্যবসাবান্ধব খ্যাতি বজায় রাখতে শাস্তির পরিবর্তে আপসকে প্রাধান্য দেয়। নিয়োগকারীর বিরুদ্ধে নিয়ম ভাঙার এবং শ্রমিকদের সঙ্গে বেতন নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের একধরনের অনাগ্রহ কাজ করে।
অথচ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, যেসব নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইচ্ছে করে শ্রমিকদের পাওনা দিতে চায় না, তাদের বিরুদ্ধে তারা মামলা চালায়। ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে তারা পুরো বেতন আদায় করতে সফল হয়।
হতাশ হয়ে বাংলাদেশের সরদার মো. ইনসান আলী ও তাঁর দুই সহকর্মী মন্ত্রণালয়ে গত সেপ্টেম্বরে অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নেন। সরদার মো. ইনসান আলী মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করার পর তাঁর ওয়ার্ক পারমিট বাতিল হয়ে যায়। এবং তাঁকে দেশে ফিরে যেতে বলা হয়। যা-ই হোক, এরই মধ্যে দেশটির সরকার এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে। বলেছে, যত দিন তাঁর মামলা চলবে, তিনি এখানে থাকতে পারবেন। তবে কোনো কাজ করতে পারবেন না।
আইনি এই কড়াকড়িতে শ্রমিকদের জন্য কাজ করা কঠিন। যদি মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে এক বেকার শ্রমিককে থাকা-খাওয়ার খরচ বহন করতে হয়, তাহলে তিনি কীভাবে এ দেশে থাকবেন? এ ক্ষেত্রে নিয়োগকারীর এ খরচ বহনের কথা থাকলেও অনেকেই তা দেয় না।

সিঙ্গাপুরের আইন অনুযায়ী, বৈধ বেতনধারী সব শ্রমিকেরই তাঁদের নিয়োগদাতা পরিবর্তনের অধিকার রয়েছে। তবে এসব অভিবাসী শ্রমিকের সহায়তাকারী বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মীরা জানান, এটা সব সময় সম্ভব হয় না। মন্ত্রণালয়ের এক হিসাবে দেখা গেছে, অনেক অনেক অভিবাসী শ্রমিক তাঁদের নিয়োগদাতা পরিবর্তনের আবেদন করেছেন। তবে মাত্র অর্ধেক লোকজনই নতুন কাজ পেয়েছেন।
এরকম যখন সিঙ্গাপুরের প্রবাসী শ্রমজীবিদের অবস্থা ঠিক তখন এই সকল হতভাগা শ্রমিকদের পাশে সেবার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে এসেছে মানিকা এন্ড কোম্পানি। এই কোম্পানির প্রধান রঞ্জিত চন্দ্র সাহা তিনি সিঙ্গাপুরে অনেকবছর যাবত এই সকল প্রবাসীদের আইনি সহায়তা প্রদান করে আসছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রে। যেমন এক্সিডেন্ট, বেতন নিয়ে ঝামেলা ইত্যাদি। গরিবের বন্ধু বলে সিঙ্গাপুরে যাকে সবাই চিনেন সেই তিনি এখন সিঙ্গাপুরে বাঙ্গালী প্রবাসী শ্রমজিবিদের আরো অনেক কাছাকাছি। সিঙ্গাপুরের মিনি বাংলাদেশখ্যাত সেরাঙ্গুনের মোস্তফা প্লাজা মিনিমারটের খুব কাছাকাছি ২১ রয়েল রোডে। এখানে সবুজ রং বিশিষ্ট তিন তলা ভবনের পুরোটা জুড়েই তিনি। এখানে তিনি তার নতুন কোম্পানি মানিকা এন্ড কোম্পানি নিয়ে সিঙ্গাপুরে প্রবাসী শ্রমজিবীদের সব রকমের আইনি সহায়তা প্রদান করে চলেছেন।
তিনি বলেন আমার জীবনের প্রায় বেশিরভাগ সময় এই সকল হতভাগা প্রবাসী শ্রমিকদের আইনি সহায়তা দিতেই চলে গেছে। সিঙ্গাপুরে সোনালি ক্যারিয়ার গড়তে আসা এই সকল প্রবাসী শ্রমিকদের পাশে থেকে তাদের সহযোগিতা করতে পেরে আমি নিজেকে খুব গর্বিত মনে করি। অনেক অনেক শ্রমিকের পরিবারের আগামির স্বপ্ন গড়ে দিতেও আমি ও আমার আইনি সেবাদানকারি প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছি নিরলসভাবে।
আগামীতেও আমরা আমাদের সেবার হাত বাড়িয়ে দিতে চাই আরো অনেকদূর। প্রবাসী শ্রমজিবিদের প্রতি আমার অনুরোধ আপনি সিঙ্গাপুরে নিজেকে অভিভাবকহীন ভাববেন না। আপনার যেকোনো প্রয়োজনে আমাদের সেবা নিতে আমাদের নতুন অফিস ২১ রয়েল রোডের রঞ্জিত সেন্টারে চলে আসুন। আমাদের সেবার দরজা আপনার/ আপনাদের জন্য সব সময় খোলা।

|
|

|
প্রবাস |


|