ভয়েস এশিয়ান, ১৯ অক্টোবর, ২০২১।। দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমে আসায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। এ পরিস্থিতিতে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের নেওয়া ঋণের পরিমাণও বেড়েছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণ প্রায় ১৭ শতাংশ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারের ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৮৬ কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছর ২০২১-২২-এর সেপ্টেম্বর শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৬ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের তিন মাস শেষে সরকারের ব্যাংক ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪ হাজার ১২১ কোটি টাকা। একই সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ঋণ পরিশোধ করেছে ৯ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা। সে হিসাবে নিট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা। যা সরকারের লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৬ শতাংশ।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকিং খাতের ঘাটতি পূরণে সরকার সেখান থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধ করছে, যা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক দিক। তিনি বলেন, সরকারের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো থাকায় ব্যাংকগুলো থেকে বাজেটের ঘাটতি মেটাতে ঋণ কম নিচ্ছে। একই সঙ্গে ঋণ পরিশোধের হার বাড়িয়ে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ। বাজেটের আয়-ব্যয়ের বিশাল ঘাটতি পূরণে প্রধান ভরসাস্থল ব্যাংক খাত থেকে নেওয়া ঋণ। এবারও ঘাটতি পূরণে ব্যাংক খাত থেকে ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার।
এদিকে, নতুন অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে সরকারি ঋণের আরেকটি বড় উৎস সঞ্চয়পত্রের মোট বিক্রি ৫৪ শতাংশ কমে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, জুলাইয়ে মোট ২ হাজার ১০৪ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। যা তার আগের মাস জুনে ছিল ৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা।
এ ছাড়া চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে ব্যাংকিং খাতে ডিপোজিটের পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৩৬৫ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরের জুলাইয়ের চেয়ে ৩৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ কম।