ভয়েস এশিয়ান, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১।। রাশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান রাশিয়ার প্রিমারস্কি অঞ্চলের গভর্নর ওলেগ কোঝেমিয়াকোর বাংলাদেশি দক্ষ জনশক্তি রফতানির বিষয়ে আলোচনা করেছেন। রাশিয়ার জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে রাজি হয়েছে দেশটি। এ বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে শিগগির সমাঝোতা স্মারক সই হবে।
মস্কোয় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস বুধবার জানিয়েছে, রাশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান ১৫ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর ভ্লাদিভস্তক সফর করেন। সফরকালে তিনি ১৭ সেপ্টেম্বর প্রিমারস্কি অঞ্চলের গভর্নর ওলেগ কোঝেমিয়াকোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে উভয় দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট নানাবিধ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
দেড় ঘণ্টা ধরে চলা আলোচনায় রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত দেড় দশকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশে যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে সে সম্পর্কে গভর্নরকে অবহিত করেন। রাষ্ট্রদূত রাশিয়ার সহযোগিতায় বাংলাদেশে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যকার চলমান অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে নতুন নতুন বিভিন্ন সহযোগিতার ক্ষেত্র উন্মোচনের ওপর গুরুত্ব দেন। এক্ষেত্রে প্রিমারস্কি অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত ভ্লাদিভস্তক শহরে অবস্থিত জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনার জন্য তিনি গভর্নরকে অনুরোধ জানান। রাষ্ট্রদূত বলেন যে, জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বাংলাদেশি শ্রমিকদের দক্ষতা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, সিঙ্গাপুরে শুধু জাহাজ নির্মাণ শিল্পেই বর্তমানে ৬০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ গত কয়েক বছরে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি ইউরোপ ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ ফেরি বোট, ফিডার ভ্যাসেল ও কোস্টাল শিপ রফতানি করছে। তিনি প্রিমারস্কি অঞ্চলের শিল্পোদ্যোক্তাদের বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান।
গভর্নর ওলেগ কোঝেমিয়াকো জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে রাষ্ট্রদূতকে আশ^স্ত করেন এবং এ সংক্রান্ত একটি কাঠামোবদ্ধ প্রক্রিয়া তৈরির জন্য আলোচনার প্রস্তাব রাখেন। এ বিষয়ে ভ্লাদিভস্তকে নিযুক্ত বাংলাদেশের অনারারি কনসাল আলেক্সান্দর জুভকোকে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালনের জন্য গভর্নরের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়। রাষ্ট্রদূত বিদেশে কর্মরত ১৩ মিলিয়ন বাংলাদেশি জনশক্তির কথা উল্লেখ করে বলেন, এ বাংলাদেশিরা সব ধরনের পরিবেশে সব ধরনের কাজে নিয়োজিত আছেন। তিনি গভর্নরকে আশ^স্ত করেন যে, রাশিয়া বাংলাদেশিদের জন্য শ্রম বাজার উন্মুক্ত করলে বাংলাদেশ রাশিয়ায় সব ধরনের দক্ষ জনশক্তি সরবরাহ করতে পারবে।
ওই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রিমারস্কি অঞ্চলের ফার্স্ট ভাইস গভর্নর; বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী; শ্রম ও কারিগরি শিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী; আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিষ্ঠানের প্রধান; রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভ্লাদিভস্তক প্রতিনিধি; ভ্লাদিভস্তকে নিযুক্ত বাংলাদেশের অনারারি কনসাল এবং মস্কোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম ও কল্যাণ উইংয়ের প্রথম সচিব।